স্বদেশ ডেস্ক: চলমান করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে নকল মাস্ক সরবরাহের অভিযোগে ছাত্রলীগের সাবেক নেত্রী শারমিন জাহানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বিএসএমএমইউ’র প্রক্টর অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন-১ শাখায় সহকারী রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত শারমিনের মালিকানাধীন অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল গত ২৭ জুন ১১ হাজার মাস্ক সরবরাহের কার্যাদেশ পায়।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান গণমাধ্যমকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এজাহারের উদ্ধৃতি দিয়ে ওসি বলেন, ‘এই কার্যাদেশের বিপরীতে অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল ৩০ জুন প্রথম দফায় ১ হাজার ৩০০, ২ জুলাই দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় ৪৬০ ও ১ হাজার এবং চতুর্থ দফায় ৭০০ মাস্ক সরবরাহ করে। তৃতীয় ও চতুর্থ দফায় পণ্য “সামগ্রিক গুণগতমানের স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী পাওয়া যায়নি” বলে অভিযোগ করা হয়।’
মামলায় অভিযোগ করা হয়, কোনো কোনো ফেস মাস্কের বন্ধনী ছিঁড়ে গেছে, কোনো মাস্কের ছাপানো ইংরেজিতে লেখা ত্রুটিপূর্ণ পাওয়া গেছে। এ ধরনের ত্রুটিতে কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারে, মাস্ক নিম্নমানের ছিল। এর ফলে কোভিড-১৯ সম্মুখযোদ্ধাদের জীবন মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়তে পারত।
এবিষয়ে ১৮ জুলাই অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী শারমিন জাহানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় বিএসএমএমইউ। ২০ জুলাই লিখিত জবাবে শারমিন দুঃখপ্রকাশ করেন, যা আসামির দোষ স্বীকারের শামিল।
বিষয়টি আমলে নিয়ে শারমিন জাহানের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪২০ ও ৪০৬ ধারায় মামলা দায়ের করা হয় বলে ওসি জানান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজে স্নাতকোত্তর করা শারমিন ২০০২ সালে ছাত্রলীগের বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল শাখার সভাপতি নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগের গত কমিটিতে তিনি মহিলা ও শিশুবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহসম্পাদক ছিলেন।
শারমিন ২০১৬ সালের ৩০ জুন স্কলারশিপ নিয়ে চীনের উহানের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যান। গত ২৩ জানুয়ারি থেকে উহানে লকডাউন শুরু হলে তিনি দেশে ফিরে আসেন। তার শিক্ষা ছুটির মেয়াদ এখনো শেষ হয়নি বলে জানা গেছে। এর মধ্যে চীনে থাকা অবস্থায় ২০১৯ সালের মার্চে অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনাল নামে সরবরাহকারী হিসেবে ব্যবসা শুরু করেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শারমিন জাহান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা নকল মাস্ক সরবরাহ করিনি। এসব প্রোডাক্ট চীন থেকে ইম্পোর্টেড। এগুলোতো আমরা তৈরি করিনি। আমরা শুধু সাপ্লাই দিচ্ছি। প্রডাক্ট খারাপ হলে বিএসএমএমইউ প্রথমবারই আমাদের বলতে পারত। আমরা সেটা যাচাই করে দেখতে পারতাম।’
আইনি প্রক্রিয়ায় অভিযোগের মোকাবিলা করবেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘মামলা যে কেউ করতে পারে। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।’